২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

স্টুডেন্ট ভিসা প্রক্রিয়া; ব্যাপারটি এত সহজ নয়


Source: Online | PNN

২ জুলাই, ২০২৪, ৬:৩৮ অপরাহ্ণ

একঘেয়ে পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে নতুন অভিজ্ঞতার সুযোগ পেতে বিদেশে অধ্যয়নের চেয়ে ভালো উপায় আর কী হতে পারে? ভিন্ন সংস্কৃতির স্বাদ পেতে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর নজর থাকে সহজে উচ্চশিক্ষা অর্জন করা যায় এমন দেশের নামের তালিকায়। কিন্তু সেখানে বাধ সাধে স্টুডেট ভিসা পাওয়ার দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সেটি কিছুটা লাঘব করতেই প্রস্তুতির টিপস থাকছে আজকের আয়োজনে।

 

যত দ্রুত সম্ভব প্রস্তুতি নিন

আবেদন করলাম, অনুমতিপত্র পেলাম, বিদেশে চলে গেলাম, ব্যাপারটি মোটেই এত সহজ নয়। স্টুডেন্ট ভিসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে দীর্ঘ সময় লাগে। সহজভাবে বলতে গেলে, স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন জমা দেওয়ার আগেই জটিল ভর্তি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে এবং প্রথমে এনরোলমেন্টের নিশ্চয়তাপত্র পেতে হবে। শেষ মুহূর্তের চাপ এবং ঝামেলা এড়াতে যত আগে সম্ভব প্রক্রিয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। গড়িমসি করলে পরে সময় পেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

 

ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা জানুন

ভিসা পেতে যা যা লাগবে তা পাসপোর্ট এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই আগে থেকেই সব তথ্য জানলেও কিছু বিষয় বাদ পড়ে যেতে পারে। এজন্য সবার প্রথমে আপনি যে দেশে পড়তে যেতে চান সেখানকার প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ হয়েছে কি না যাচাই করুন। এ ক্ষেত্রে আর্থিক প্রমাণপত্র, স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে একটি গ্রহণযোগ্যতার চিঠি, স্বাস্থ্য বীমা এবং অন্যান্য শর্তাবলী প্রয়োজন হতে পারে। সঠিক তথ্য পেতে যার সাহায্য নিয়ে ভর্তি হয়েছেন বা হবেন তার সঙ্গে পরামর্শ করুন।

 

সঠিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করুন

একটি স্বনামধন্য এবং অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে পারলে ভিসা আবেদনের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। ভিসা অফিসার আবেদনপত্র বিবেচনা করার সময় প্রায়ই প্রতিষ্ঠানের সুনাম বিবেচনা করে। এজন্য এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ বেছে নিন যার আপনার অধ্যয়নের ক্ষেত্র অনুযায়ী ভালো নামডাক রয়েছে।

 

আর্থিক প্রয়োজনীয়তা বোঝার চেষ্টা করুন

আর্থিক নথিপত্র ভিসা আবেদনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পড়ালেখা করার পুরো সময়জুড়ে টিউশন ফি, জীবনযাত্রার খরচ ও অন্যান্য ব্যয়সহ মোট কী পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন তা জেনে নিন। সেই অনুযায়ী তহবিল সংগ্রহ করুন। আপনার আর্থিক নথিপত্র সঠিক, স্বচ্ছ ও যাচাইযোগ্য হওয়ার পর আবেদন করুন।

 

বিশ্বাসযোগ্য ‘স্টেটমেন্ট অব পারপাস’ তৈরি করুন

আপনার ‘স্টেটমেন্ট অব পারপাস’ লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেবে। স্টেটমেন্ট অব পারপাস লেখার সময় আপনি কেন সেই নির্দিষ্ট দেশে অধ্যয়ন করতে চান তা ব্যাখ্যা করুন, কোর্সটি কীভাবে আপনাকে আপনার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে এবং কীভাবে পড়ালেখার পর সেই ডিগ্রি ব্যবহার করতে চান তা লিখুন। একটি সুলিখিত বিবৃতি আপনার আবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে পারে।

 

অভিজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ নিন

উচ্চশিক্ষা বিষয়ক পরামর্শদাতা বা ভিসা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ পেলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যেতে পারে। এ ছাড়া, একই দেশে পড়তে গিয়েছে এমন কারও সঙ্গে যোগাযোগ করলে সুবিধা পাবেন। তারা ভিসা আবেদন করার জন্য কী কী বিষয় খেয়াল রাখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতি ও অন্যান্য বিশদ বিবরণ দিতে পারবে।

 

সব নথিপত্র গুছিয়ে ফেলুন

নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক নথিপত্র একত্রে গুছিয়ে রাখুন। পাসপোর্টের কপি, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, ইংরেজি ভাষার পরীক্ষার স্কোর, আর্থিক বিবৃতি এবং অন্যান্য নথি কী কী লাগবে তালিকা করুন আগে। পরিপাটি নথিপত্র আপনার অধ্যবসায়, আগ্রহ তুলে ধরবে।

 

দেশের সঙ্গে দৃঢ়তার সম্পর্ক তুলে ধরুন

ভিসা সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করতে পারে অধ্যয়নের পর দেশে ফেরত আসতে চান কি না। তখন পরিবার, সম্পত্তির মালিকানা বা কাজের সম্ভাবনার মতো বিষয়গুলো খেয়াল রেখে উত্তর দেবেন। দেশের প্রতি দৃঢ়তার সম্পর্ক দেখাতে ভুলবেন না।

 

সৎ এবং স্বচ্ছ থাকুন

পুরো আবেদন প্রক্রিয়ায় সততা বজায় রাখতে হবে। ভুল বা অসত্য বিষয় বললে তা প্রকাশ হয়ে যায় যেকোনো সময়। তখন ভিসা প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি ভবিষ্যতের ভিসার আবেদনও প্রত্যাখ্যান হতে পারে। তাই খোলামেলাভাবে উত্তর দিন।

 

আত্নবিশ্বাসী থাকুন

স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া কিছুটা দ্বিধায় ফেলে দিতে পারে। এটি স্বপ্ন পূরণের দ্বার মনে রাখতে হবে। তাই শঙ্কা কাটাতে হবে নিজেকেই। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন। ভিসার ধাপ পরিচালনার বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা রাখুন। যে দেশে যাবেন সে দেশ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করুন, নিজের প্রতি আস্থা রাখুন।