ভারতে বিমান মহড়ায় অংশ নিচ্ছে না বাংলাদেশ
| PNN
৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:১৫ অপরাহ্ণ
ভারতের যোধপুরে শুরু হয়েছে বিভিন্ন দেশের বিমান মহড়ার বাৎসরিক কার্যক্রম তরঙ্গ শক্তি। গত ২৯ আগস্ট শুরু হওয়া এই মহড়া চলবে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে সিদ্ধান্ত বাতিল করে সেই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে না বাংলাদেশ।
মূলত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সি-১৩০ পণ্যবাহী বিমানের ওই মহড়ায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তবে মহড়ায় অংশ না নিলেও পর্যবেক্ষক হিসেবে কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাকে ভারতে পাঠাবে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের ভারতের প্রথম বড় বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক বিমান মহড়া — তরঙ্গ শক্তি — এর দ্বিতীয় পর্বের জন্য নিজেদের সি-১৩০ পরিবহন বিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেছে ঢাকা।
তবে মহড়ায় বাংলাদেশ অংশ না নিলেও পর্যবেক্ষক হিসাবে তিনজন সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাকে পাঠাবে বলে ভারতীয় প্রতিরক্ষা সংস্থার বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে। এসব সূত্র জোর দিয়ে বলেছে, বাংলাদেশ এই মহড়া বয়কট করছে না।
সূত্রগুলো দ্য প্রিন্টকে আরও জানিয়েছে, মহড়ায় বাংলাদেশ অংশ না নেওয়ায় এখন শ্রীলঙ্কা দুটি বি-২০০ সুপার কিং সামুদ্রিক নজরদারি বিমান নিয়ে এতে অংশগ্রহণ করবে। যদিও এই মহড়ায় প্রথমে দেশটির বিমান পাঠানোর কথা ছিল না।
ভারতে দুই দফায় বিমান মহড়া তরঙ্গ শক্তি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম দফা হয়েছে গত ৬ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত। তাতে অংশ নেয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশ আর এই মহড়ায় যোগ দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ঢাকা।
যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, গ্রিস, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), জাপান প্রভৃতি দেশ ভারতে এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, দেশের শাসন ক্ষমতায় পালাবদলের কারণে বাংলাদেশ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর রাতারাতি ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ভালোভাবে নেয়নি। তার ওপর বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যা নিয়েও ভারতের দিকে আঙুল উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতে বিমান মহড়া এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
দ্য প্রিন্ট বলছে, ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভের পর গত ৫ আগস্ট হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়। নতুন সরকারের শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক সংকটে পতিত হয়েছে।
এছাড়া হাসিনাকে ঢাকায় প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আহ্বান বাড়ছে। একইসঙ্গে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে নতুন সরকার নয়াদিল্লিতে আশ্রয় নেওয়ার বিষয়ে হাসিনার সিদ্ধান্তের প্রকাশ্যে সমালোচনাও করেছে।