বিশ্ব হার্ট দিবসে মাতৃভূমি হার্ট কেয়ারের আলোচনা সভা ও ম্যাগাজিন উদ্বোধন
এমদাদুল হক | PNN
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৪:৫০ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশের অন্যতম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মাতৃভূমি গ্রুপ। মাতৃভূমি গ্রুপের অন্যতম সহযোগী প্রতিষ্ঠান মাতৃভূমি হার্ট কেয়ার লিমিটেড। আজ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং সোমবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সফিকুল কবীর মিলনায়তনে বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ম্যাগাজিন উদ্বোধনের আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। মাতৃভূমি হার্ট কেয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম হানিফ মাস্টারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব প্রফেসর ডক্টর মোঃ শহিদুল ইসলাম। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাতৃভূমি হার্ট কেয়ার লিমিটেডের সিইও ডাক্তার এম এম রহমান। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডক্টরস ক্লিনি ক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডঃ আশরাফ আলী, ইবনে সিনাহ হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও হার্ট বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোঃ মফিজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিভাগের সাবেক পরিচালক ডঃ আব্দুল হান্নান, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল সাবেক সিইও ডাক্তার আমির হোসেন, হরমোন ও মেটাবলিজম বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সাকিরা নোভা।
এছাড়াও অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন মাতৃভূমি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মাইনউদ্দিন মিয়া। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেনিথ লাইফ ইন্সুরেন্সের এমডি মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. শাহরুখ আদনান।
ইঞ্জিনিয়ার মাইনউদ্দিন মিয়া তার বক্তব্য বলেন, আমাদের হাসপাতাল মূলত সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান। মানব দেহের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হৃদপিণ্ড অর্থাৎ হার্ট। যা বিকল হলে মানুষ বাঁচে না। সাধারণ মানুষকে সেবা দেওয়ার মানসিকতা থেকে এ হাসপাতাল আমরা গড়ে তুলেছি। ইতোমধ্যে প্রাকৃতিক বাইপাস পদ্ধতির এই চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়মিত রোগীরা সুস্থতা পাচ্ছে। বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে আজকের এই আলোচনা সভায় সরকারকে বলতে চাই প্রত্যেকটি সরকারি হাসপাতালে আমাদের মত এ ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলন করে সাধারণ মানুষকে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় তিন লক্ষাধিক ব্যক্তি হার্ট অ্যাটাকে মারা যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে এজন্য সরকার ও ডাক্তারদের সমন্বিত প্রয়াস দরকার। কারণ মানবদেহের সবচেয়ে শক্তিশালী ও অক্লান্ত পরিশ্রমী অঙ্গ হার্ট নিয়ে কথা বলার জন্য। প্রতিদিন প্রায় এক লক্ষ বার এটি স্পন্দিত হয়ে শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছে দেয়। অথচ আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, মানসিক চাপ ও শারীরিক পরিশ্রমের অভাব আমাদের এই মহামূল্যবান অঙ্গটিকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছি।
প্রতি বছর ২৯শে সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব হার্ট দিবস। এর উদ্দেশ্য—
• হৃদরোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা,সুস্থ জীবনযাপনের গুরুত্ব তুলে ধরা, এবংমৃত্যুহার হ্রাসে মানুষকে অনুপ্রাণিত করা।
এ বছরের প্রতিপাদ্য—Don’t miss a Beat “প্রতিটি হৃদস্পন্দনের যত্ন নিন।
মানব সন্তান মাতৃগর্ভে থাকাকালীন ২২তম দিন থেকে এই হৃৎপিণ্ডের চলাচল শুরু হয় এবং আমৃত্যু চলতে থাকে। অথচ আমরা এই চলমান অমূল্য সম্পদকে অনেক সময় অবহেলা করি । আধুনিক জীবনযাত্রার ব্যস্ততা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত ঘুম, মানসিক চাপ, ধূমপান এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব— সবকিছু মিলেই আমাদের হার্টকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়।
কেন হার্টের যত্ন জরুরি?বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে হৃদরোগ অন্যতম প্রধান মৃত্যুর কারণ।এটি কেবল বয়স্ক নয়, এখন তরুণদেরও আক্রান্ত করছে।তবে সুখবর হলো—সচেতনতা ও জীবনধারার পরিবর্তনের মাধ্যমে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
মানুষের প্রতি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মাতৃভূমি হার্ট কেয়ার লিঃ। আমরা বিশ্বাস করি—হার্ট এর রোগের চিকিৎসায় সর্বদা অস্ত্রোপচারই একমাত্র সমাধান নয়।
মাতৃভূমি হার্ট কেয়ারের ভিন্নধর্মী উদ্যোগ
এজন্য আমরা কাজ করছি আধুনিক ও প্রমাণিত দুইটি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতিতে—
• EECP (Enhanced External Counterpulsation): নন-সার্জিকাল চিকিৎসা যা রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে হার্ট ব্লকেজ ও এনজাইনা কমায়।
• BCT (Blood Cleansing Therapy): রক্ত পরিশোধনের মাধ্যমে শরীরকে নতুন সজীবতা দেয় এবং হৃদপিণ্ডকে শক্তিশালী করে।
আমাদের লক্ষ্য—
✅ হৃদরোগ প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি
*আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রাকৃতিক চিকিৎসার সমন্বয়।
*সবার জন্য সাশ্রয়ী ও কার্যকর হৃদযত্ন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা
হার্ট সুস্থ রাখার করণীয়
*প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম করা
*পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, চর্বিযুক্ত ও প্রসেসড খাবার পরিহার
* ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকা
*পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
*নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, রক্তচাপ-ডায়াবেটিস-কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ।
মাতৃভূমি হার্ট কেয়ারের পক্ষ থেকে হার্ট এট্যাকের ঝুঁকি কমাতে সরকারের কাছে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হলো।
০১। দেশের সকল গণমাধ্যমে বাধ্যতামূলক হার্ট এট্যাকের ঝুঁকি কমাতে করণীয় সম্পর্কে নিয়মিত প্রচার করা।
০২। সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপানে নিরুৎসাহিত করতে সরকারী-বেসরকারি সকল অফিসে স্বাস্থ্য কর্নার চালু করা।
০৩। উপজেলা এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোতে আরো উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং জরুরী স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা।
আলোচনা সভায় কোম্পানির পরিচালক বৃন্দ, উপদেষ্টা, অতিরিক্ত পরিচালক ও ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।