১৩ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বদলে গেল নববর্ষের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ নাম


| PNN

১১ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:০৮ অপরাহ্ণ

দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে যে নববর্ষের শোভাযাত্রা বের হয় তার নাম আর মঙ্গল শোভাযাত্রা থাকছে না। আজ শুক্রবার সকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ। শোভাযাত্রার নাম হচ্ছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এবার নববর্ষের শোভাযাত্রার প্রস্তুতির শুরু থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি নাম পরিবর্তনে জোর দিয়ে আসছিলেন।

সাংবাদিকরা সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে এ নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রশ্ন করেছেন। নাম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শোভাযাত্রার আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেবে বলে জানিয়ে আসছিলেন উপদেষ্টা। অবশেষে আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ওসমান জামাল মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নাম নিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্যসচিব ও চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ, শোভাযাত্রার উপকমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক এ এ এম কাওসার হাসান, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি ও উপকমিটিসমূহের সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ পহেলা বৈশাখে উৎসবমুখর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করে থাকে। এটি দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এবং গুরুত্ববহ বলে বিবেচিত হয়। প্রতিবছরের মতো এ বছরও চারুকলা অনুষদ পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আয়োজনের কাজ চলছে।

অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছরের শোভাযাত্রাটি হবে সর্ববৃহৎ, বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ। শোভাযাত্রায় বৈচিত্র্য ও বিভিন্ন জাতিসত্তার অংশগ্রহণ থাকবে।
গত শতকের আশির দশকে শুরু হওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রাকে জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেসকো বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আবেদনক্রমে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বর বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। শোভাযাত্রায় প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের প্রতীকী শিল্পকর্ম বহন করা হয়। বাংলা সংস্কৃতির পরিচয়বাহী নানা প্রতীকী উপকরণ বিভিন্ন রঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি নিয়ে ধর্ম, বর্ণ-নির্বিশেষে সমাজের বিভিন্ন স্তরের নানা পেশার মানুষ এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।

এবার ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্যে উদযাপিত হবে বাংলা নববর্ষের শোভাযাত্রা। অন্যদিকে রবিবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চারুকলার বকুলতলায় থাকবে চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠান।