২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দেশের ২৮টি বিমানবন্দর সচলে উদ্যোগী বেবিচক


Online Desk | PNN

১৭ মে, ২০২৩, ১:৫৪ অপরাহ্ণ

দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্রিটিশ সরকারের আমলে তৈরি ২৮টি বিমানবন্দর রয়েছে। এসব বন্দরে রয়েছে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার ফুট দীর্ঘ রানওয়েও। কিন্তু এগুলো বর্তমানে বিমান চালনার অনুপযুক্ত। কয়েকটি রয়েছে বিভিন্ন সংস্থার দখলে। এসব বন্দরসহ আরও হাজার হাজার কোটি টাকা মূল্যের বেদখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারে মাঠে নামছে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এজন্য গঠন করা হয়েছে একাধিক টিম। এসব টিম এরই মধ্যে তৎপর হয়ে উঠেছে। বেবিচকের গত এপ্রিলের মাসিক সমন্বয় সভায় এ সংক্রান্ত বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

জানা গেছে, এসব বিমানবন্দরের রানওয়েগুলোর দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ছয় হাজার থেকে ৮ হাজার ফুট পর্যন্ত করার টার্গেট নিয়েছে বেবিচক। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিত্যক্ত, অব্যবহৃত ও দখলে থাকা ৭টি বিমানবন্দর নতুন করে চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ঈশ্বরদী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, বগুড়া, শমসেরনগর, কুমিল্লা ও তেজগাঁও বিমানবন্দর। বর্তমানে এসব বন্দরের কোনোটিতেই বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করছে না। দেশের অভ্যন্তরে পর্যটন খাতের বিকাশ এবং আকাশপথে যাত্রী পরিবহন বাড়াতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বেবিচকের সভাসূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও বলেছেন, সারা দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোর আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এ লক্ষ্যে কাজ চলছে।

বেবিচকের সভাসূত্র জানায়, এখন থেকে প্রতি মাসের সমন্বয় সভায় বেবিচক ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন (বাপক) কর্তৃক দুই-তিনটি জেলার জমির তথ্য উপস্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি বেদখলকৃত জমির ডেটাবেজ প্রস্তুত এবং তা উদ্ধারে কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। বিমানবন্দরগুলোর জমি বিভিন্ন সংস্থার দখলে রয়েছে, যা নিজ নামে আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বেবিচক। সেভাবেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোলায় বেদখল হওয়া ৩৫ দশমিক ৯১ একর জমি উদ্ধার ও ভূমি উন্নয়ন কর নেওয়ার জন্য ভোলা জেলা প্রশাসককে গত জানুয়ারি মাসে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এরপর বিষয়টি সুরাহা করতে জেলা প্রশাসক একটি কমিটি গঠন করেছে।

এদিকে বিভিন্ন সংস্থার দখলে থাকা বিমানবন্দরগুলোর জমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের বরাবর পত্র প্রেরণ করেছে বেবিচক। রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় বেবিচকের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমি এপিবিএনসহ বিভিন্ন সংস্থার দখলে রয়েছে। এখানে বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের ওয়্যারহাউস নির্মাণ করা হবে। জরুরি ভিত্তিতে এ জমি হস্তান্তর করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছে বেবিচক। এছাড়া বিমানের দাবিকৃত আশকোনা হজ ক্যাম্পের সামনে শত কোটি টাকা মূল্যের জায়গার লিজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সে জমি দখল নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বেবিচক। প্রতি মাসের সমন্বয় সভায় এসব বিষয়ের হালনাগাদ তুলে ধরতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রণালয়কেও অবহিত করতে বলা হয়েছে।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা জানান, রেল ও সড়কপথে যানবাহন ও যাত্রীচাপ অনেক বেড়ে যাওয়ায় কাক্সিক্ষত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানো দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। এ জন্য যাত্রীরা এখন আকাশপথের দিকে ঝুঁকছেন। তাই বন্ধ থাকা অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক বিমানবন্দরগুলো সচলে বেবিচকের এ উদ্যোগ সময়োপযোগী ও যথার্থ। এটা করা গেলে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোও এগিয়ে আসবে। ফলে আকাশপথে পরিবহন বাড়বে; বাড়বে যাত্রীও।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, বন্ধ থাকা বিমানবন্দরগুলো সচলে আমরা বেশকিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত কিছু বিমানবন্দর বিভিন্ন সংস্থার দখলে রয়েছে। সেগুলো আমাদের আওতায় নেবো। বিমানবন্দরের জায়গা নির্ধারণ করছি, কিছু জায়গা দখল হয়ে গিয়েছিল, তার কিছু উদ্ধার করেছি, সেগুলো সীমানাপ্রাচীর দিয়ে নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে এসেছি। বাকিগুলো উদ্ধারে কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি যোগ করেন, বেবিচকের বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারেও কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তাদের কাজ করছে।