ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা করতে চাইলে যা জানতে হবে
Online Desk | PNN
২৩ মে, ২০২৩, ৪:৫৬ অপরাহ্ণ
এ সময়ে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা বেশ জনপ্রিয়। ব্যস্ততার যুগে অনেকেই ঝুট-ঝামেলা ছাড়া বেড়াতে পছন্দ করেন। তারা খুঁজে বেড়ান এমন কোনো এজেন্সি যেখানে একসঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও নির্দেশনা পাওয়া যাবে। একটু দক্ষতা ও বিচক্ষণতা থাকলে ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায় সহজেই সফলতা পেতে পারেন।
ট্রাভেল ব্যবসার ধরন : ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসার কাজের ধরন নানা রকম হতে পারে। কোনো কোনো এজেন্সি শুধুমাত্র প্লেন বা বিমান টিকিট কেটে দেয়, কোনো কোনো এজেন্সি বিভিন্ন প্যাকেজ ট্যুর নিয়ে কাজ করে বা কেউ কেউ হোটেল বুকিংয়ের কাজ করে। আবার কেউ কেউ নিজেরাই বিভিন্ন ট্যুর নিয়ে কাজ করে। ছোট পরিসরে শুরু করলে শুধুমাত্র টিকিট বুকিং দেওয়াই হতে পারে একমাত্র কাজ। সেক্ষেত্রে যেসব স্থানের টিকিট পাওয়া কষ্টকর হয়ে থাকে বা কিছু কিছু সময়ে টিকিট পাওয় যায় না, সে সময় এজেন্সি থেকে সেসব টিকিট সংগ্রহ করে দেওয়া যেতে পারে। আবার বড় বড় ট্রাভেল এজেন্সি আছে যারা নিজেরাই বিভিন্ন ট্যুর প্ল্যান ও অর্গানাইজ করে থাকে। কিছু কিছু ট্যুর থাকে যেখানে টিকিট বুকিং শুরু করে হোটেল ভাড়া নেওয়া, খাবার-দাবারসহ সব কিছু এজেন্সির সদস্যরাই দেখাশুনা করে থাকেন। এবং সেবা গ্রহণকারীরা তার একটা মূল্য দিয়ে দেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ট্রাভেল এজেন্সির সদস্যরা শুধু ট্যুর আয়োজন করে দেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এজেন্সির সদস্যরা গাইড হিসেবে টুরিস্টদের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখানোর দায়িত্বও নিয়ে থাকেন।
স্মার্ট পরিকল্পনা : ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা শুরু করার আগেই পরিকল্পনা করে নিতে হবে। ঠিক করতে হবে ঠিক কোন ধরনের সেবা দেবেন। বড় পরিসরে শুরু করতে চাইলে ঠিক করতে হবে ঠিক কোন কোন স্থানে ট্যুর প্যাকেজ পরিচালনা করা যাবে। নতুন শুরু করার পর এক সঙ্গে অনেক জায়গায় প্যাকেজ পরিচালনা না করে নির্দিষ্ট কিছু স্থান বাছাই করা। সে সব জায়গার যথাযথ খোঁজখবর রাখা। জায়গা ভালো কি না, হোটেলের সুযোগ-সুবিধা, আবহাওয়া কেমন, রাজনৈতিক পরিবেশ ভালো কি না, কী পরিমাণ খরচ হতে পারে সে সব আগে থেকেই খোঁজ করতে হবে। ট্যুর পরিচালনা করলে নিজের কী পরিমাণ লাভ থাকবে তার হিসাব প্রতিনিয়ত রাখতে হবে। কারণ সময়ের সঙ্গে কমবেশি হতে পারে।
বিভিন্ন দেশ ও দর্শনীয় স্থান সম্বন্ধে জানা : ট্রাভেল ব্যবসা শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন দেশ ও স্থান সম্পর্কে ধারণা ও তথ্য সংগ্রহ রাখতে হবে। যাতায়াত ব্যবস্থা, থাকা-খাওয়ার খরচ, জায়গা ঘুরে দেখার জন্য খরচ কেমন পড়বে বা প্রয়োজনে এলাকার স্থানীয় পরিবহন সম্পর্কে ও খোঁজখবর নিতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সেখানকার হোটেল মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে তারা কী ধরনের সেবা দিতে প্রস্তুত। প্রয়োজনে নতুন নতুন জায়গার খোঁজও রাখতে হবে। যাতে প্রতিযোগিতার বাজারে অন্য কোম্পানি থেকে এগিয়ে থাকা যায়। সব কিছু সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে ব্যবসা পরিচালনা সহজ হবে।
স্মার্ট অফিস : ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য বাণিজ্যিক এলাকায় একটি সুন্দর অফিস ঘর প্রয়োজন হতে পারে। বর্তমান ডিজিটাল যুগে বিভিন্ন খোঁজখবর অনলাইনে নেওয়ার জন্য কম্পিউটার থাকতে হবে। সুসজ্জিত অফিস কামরা তৈরি করতে হবে যেন কাস্টমার এসে সুন্দর একটা পরিবেশ পায় এবং এজেন্সির সেবা দেওয়ার মান বুঝতে পারে। কাস্টমারের সঙ্গে সুন্দরভাবে আলোচনা করতে হবে এবং কাস্টমারকে বুঝাতে একজন স্মার্ট ও চৌকস ব্যবস্থাপকেরও প্রয়োজন।
অন্যান্য : ট্রাভেল এজেন্সি ব্যক্তিমালিকানাধীন আবার বহু মালিকানাধীনও হয়ে থাকে। যে কোনো বড় কোম্পানি শুরু করতে হলে ট্রেড লাইসেন্স জরুরি। লাইসেন্স একটি কোম্পানিকে যে কোনো ধরনের বড় ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়। কোম্পানির নাম ঠিক করে, অফিস ঠিক করে তারপর লাইসেন্স তৈরি করতে হবে। ট্রাভেল এজেন্সি খোলার পর এজেন্সির নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। ব্যবসা সংক্রান্ত যাবতীয় লেনদেন সেই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। ব্যবসা শুরু করার পর কোম্পানির নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট থাকা জরুরি। এই ওয়েবসাইটে ট্যুর-এর সমস্ত প্যাকেজ, সুযোগ-সুবিধা দেওয়া থাকতে হবে। ক্রেতা আকর্ষণ করার জন্য ওয়েবসাইট বিভিন্ন ছবি ও তথ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত আপডেট রাখতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও এর প্রচার করতে হবে। প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করে প্রচার করারও প্রযোজন।