‘ক্ষমতায় গেলে সকল জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে ‘রেইবো নেশন’ গড়বে বিএনপি’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সকল জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে ‘রেইবো নেশন’ (রংধনু জাতি) গড়ে তুলবে বলে জানালেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকায় ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠি ‘গারো’ সম্প্রদায়ের এক অনুষ্ঠানে দলের এই অবস্থানের কথা জানান তিনি।

ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব ২০২২ সালে যে ৩১ দফা ঘোষণা দিয়েছেন, সেখানে তিনি খুব পরিষ্কার করে বলেছেন, আমরা একটা রেইনবো নেশন তৈরি করব। অর্থাৎ যে নেশনে সব সম্প্রদায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে সেখানে তারা তাদের অবদান রাখতে সক্ষম হবে। আগামীতে বিএনপি সরকারে এলে অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আপনাদের সমস্যাগুলো বিবেচনা করা হবে।’

গারো সম্প্রদায়ের দাবি-দাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ঘোষিত ভিশন-২০৩০ কর্মসূচিতে সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি-ঐতিহ্য রক্ষা করা এবং তাদের সমস্যার সমাধানের পৃথক অধিদফতর গঠনের ঘোষণা রয়েছে। বিএনপি আগামীতে সরকারে এলে ঢাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর পৃথক সাংস্কৃতিক একাডেমি গঠন করা হবে এবং সরকারিভাবে গারোদের ‘ওয়ানগালা উৎসব’ পালনের বিষয়ে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা হবে।’

রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল ও কলেজ মাঠে ঢাকায় বসবাসরত ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠি ‘গারো’ সম্প্রদায়ের সংগঠন ঢাকা ওয়ানগালা কমিটির উদ্যোগে ‘ঢাকা ওয়ানগালা উৎসব-২০২৫’ উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। অনুষ্ঠানে গারো সম্প্রদায়ের সদস্যরা নাচ-গান পরিবেশন করে।

‘সকল জাতিগোষ্ঠীর স্বীকৃতি দিতে হবে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের মূল যে ধারা, সেই ধারার সঙ্গে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে এক হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। মন-মানসিকতায় বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আপনাদেরকে উঠে দাঁড়াতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেই জন্যই বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদকে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এর একটাই উদ্দেশ্য, শুধু বাঙালি নয়, বাংলাদেশে তাদেরকে একটা স্বীকৃতি দেওয়া, আর যেগুলো আদিবাসী আছেন, জাতিগোষ্ঠী আছেন, তাদেরকেও সেই স্বীকৃতি তিনি দিয়েছেন। তখন থেকেই আমরা গারো সম্প্রদায়কে স্বীকৃতি দিয়েছি, তাদের কৃষ্টি সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য এবং সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার, তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন।’

‘আমি আপনাদের পক্ষে কথা বলব’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা-১৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, ‘আপনারা (গারো সম্প্রদায়) নিজেদেরকে দুর্বল মনে করবেন না। আপনারা সংখ্যায় কম হতে পারেন, তবে আমরা আপনাদের ভাই, আমরা বাংলাদেশি, আমরা আপনাদের পাশের মানুষ। আপনারা যখন বললেন, আপনাদের মধ্য থেকে সংসদে কথা বলতে প্রতিনিধি লাগবে।’

তার প্রশ্ন, ‘কেনো আপনাদের কি আমাদের বিশ্বাস হয় না? আমাদের ওপরেও বিশ্বাস রাখেন ইনশাআল্লাহ। আপনাদের যেকোনো অসুবিধা, যেকোনো দাবি আমি আজকে বলে যাচ্ছি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে আপনারা আমার কাছে বলে যাবেন, আমাদের দিয়ে যাবেন। আমি এতটুকু আপনাদের বলতে পারি, আপনাদের প্রতিনিধি সংসদে যা বলবে ইনশাআল্লাহ কোনো অংশে আপনাদের পক্ষে কম দাঁড়াবো না।’

সঞ্চয় নাফাকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী দলের সভাপতি মৃগেন হাগিদক, ক্রিস্টিয়ান সার্ভিস সোসাইটির পরিচালক বাপন মানকিন, বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির পরিচালক পরাগ রিটসিল ও আয়োজক কমিটির শুভজিট স্যানগমা নাকমা প্রমুখ।