অবশেষে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রবেশ করছে মণিপুর
| PNN
৮ মার্চ, ২০২৫, ১২:২৩ অপরাহ্ণ

দীর্ঘ ২২ মাস রক্তক্ষয়ী জাতিগত সংঘাতের পর অবশেষে শান্তিপূর্ণ স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রবেশ করছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর। আজ শনিবার থেকে মণিপুরের সব সড়কে জনগণ ও যান চলাচল অবাধ ও নির্বিঘ্ণ করতে রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের মুখ্যমন্ত্রী অমিত শাহ।
প্রসঙ্গত, স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির শাসন জারি হয় মণিপুরে। সেই থেকে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্য সরকারের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বে রয়েছেন গভর্নর এ কে ভাল্লা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি অনলাইন জানিয়েছে, সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর প্রহরায় আজ শনিবার ভোর থেকে ইম্ফল-কাংপোকপি-সেনাপতি, সেনাপতি-কাংকোপকি-ইম্ফল, ইম্ফল-বিষ্ণুপুর-চূড়াচন্দ্রপুর, চূড়াচন্দ্রপুর-বিষ্ণুপুর-ইম্ফলসহ সব রুটে চলাচল শুরু করেছে সরকারি বাস। এছাড়া রাজধানী ইম্ফলের সঙ্গে চূড়াচন্দ্রপুর এবং উখরুলের হেলিকপ্টার রুটও সচল হয়েছে আজ থেকে।
২০২৩ সালের মে মাসে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠী হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই গোষ্ঠীকে তফসিলি জাতির স্বীকৃতি দেন মণিপুর হাইকোর্ট। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী কুকিরা। এই সম্প্রদায়ের লোকজন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।
অল্প সময়ের মধ্যেই কুকিদের সেই বিক্ষোভ রূপ নেয় জাতিগত দাঙ্গা। গত ২২ মাস ধরে চলা এই রক্ষক্ষয়ী দাঙ্গায় মণিপুরে নিহত হয়েছেন মেইতেই, কুকি ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর আড়াই শতাধিক মানুষ এবং বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটতে বাধ্য হয়েছেন আরও কয়েক হাজার।
সংঘাতের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণে রাজ্যের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে যান-বাহন চলাচল কমে গিয়েছিল। শনিবার থেকে মূলত সেই স্বাভাবিক করা শুরু হয়েছে।
মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতিই এবং এই গোষ্ঠীটির মিত্র অন্যান্য কয়েকটি জাতিগোষ্ঠী শনিবার রাজধানী ইম্ফলে শান্তি মিছিল আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় গভর্নর সেই মিছিলের অনুমতি দেননি।
কারণ রাজধানীতে মেইতেই জাতিগোষ্ঠীর লোকজন সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও ইম্ফলকে ঘিরে যেসব পাহাড় রয়েছে, সেগুলো কুকি জাতিগোষ্ঠীর বিভিন্ন গোত্র অধ্যুষিত। শান্তি মিছিল বের করা হলে হামলার গুরুতর আশঙ্কা ছিল।
কারণ শান্তি মিছিল আয়োজনের খবর প্রচারিত হওয়ার পর ইতোমধ্যেই প্রতিবাদ জানিয়েছে কুকি জাতিগোষ্ঠীর বিভিন্ন গোত্রের নেতারা। এক যৌথ বিবৃতিতে নেতারা বলেছেন, এ ধরনের মিছিল আয়োজন করা হলে তা হবে খুবই ‘বিপজ্জনক উসকানি’।
সূত্র : এনডিটিভি অনলাইন